জন্ম :হযরত আবদুল কাদের জিলানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি জন্মগ্রহণ করেন ১০৭৭ খ্রিস্টাব্দ মুতাবিক ৪৭০ হিজরীর রমযান মাসের ১ তারিখ সেহরির ওয়াক্তে জিলান বা গীলান অঞ্চলে হযরত ইমাম হাসান রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর বংশধারায় এক ঐতিহ্যবাহী সৈয়দ পরিবারে।
•আম্মা সৈয়দা উম্মুল খায়ের ফাতিমা রহমাতুল্লাহি আলায়হিও ছিলেন হযরত ইমাম হুসাইন রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুর বংশধারার এক ঐতিহ্যবাহী সৈয়দ পরিবারের কন্যা।
•আব্বা সৈয়দ আবু সালিহ মূসা জঙ্গীদুস্ত ছিলেন সে যুগের একজন বিখ্যাত সূফী এবং আম্মাজানও ছিলেন মশহুর হাফিজা ও আবিদা।
•আব্বা সৈয়দ আবু সালিহ মূসা জঙ্গীদুস্ত ছিলেন সে যুগের একজন বিখ্যাত সূফী এবং আম্মাজানও ছিলেন মশহুর হাফিজা ও আবিদা।
আব্দুল
কাদের জিলানী হলেন ইসলাম ধর্মে অন্যতম প্রধান আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্ত্ব। তিনি ইসলামের অন্যতম প্রচারক হিসাবে সুবিদিত; সেকারণে তাকে 'গাউস-উল-আজম'আধ্যাত্মিকতায়
উচ্চমার্গের জন্য বড়পীর, ইরাকের অন্তর্গত 'জিলান' নামক স্থানে জন্মগ্রহণ করায় জিলানী, সম্মাণিত হিসাবে আবু মোহাম্মদ মুহিউদ্দীন প্রভৃতি উপাধি ও নামেও তাকে
সম্বোধন করা হয়
শিক্ষা :অতি শৈশবেই তিনি কুরআন শরীফ হিফজ করেন। বিভিন্ন বর্ণনা মতে তিনি মাতৃগর্ভে থাকাকালেই ১৮ পারা কুরআন শরীফ হিফজ করেন।যখন ৪ বছর বয়সে আম্মাজান একজন ক্বারীর কাছে কুরআন মজীদ শিক্ষা গ্রহণের জন্য পাঠান। শিক্ষক দেখলেন বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম বলার সাথে সাথে একনাগাড়ে সূরা ফাতিহা থেকে ১৮ পারা পর্যন্ত মুখস্থ তিলাওয়াত করছে তখন সবাই বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গেলেন। এ খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে বহু মানুষ তাঁকে দেখবার জন্য ভিড় করলেন এবং সবাই বলাবলি করতে লাগলেন, এ শিশু সাধারণ কোন শিশু নয়, নিশ্চয়ই এ শিশু একজন মশহুর আল্লাহর ওলী হবেন।
বই:তিনি কাব্য,
সাহিত্য, ইতিহাস,
দর্শন,
ভূগোল
ইত্যাদি বিষয়ের পণ্ডিত
ছিলেন।
তার
রচিত
বহু
গ্রন্থ
রয়েছে। এসব
গ্রন্থের মধ্যে
ফতহুল
গায়ের
গুনিয়াতুত তালেবীন, ফতহুর
রবযানী,
কালীদায়ে গাওসিয়া উল্লেখযোগ্য।
ইন্তেকাল:হিজরী
৫৬১
সালের
১১
রবিউসসানী আব্দুল
কাদের
জিলানী
(র.)
পরলোক
গমন
করেন।
তার
বয়স
হয়েছিল ৯১
বছর।
বড়পীর
সাহেবের এই
ওফাতের
দিন
সারা
বিশ্বের মুসলমানরা প্রতি
বছর
অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে
পালন
করে
থাকে ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহাম হিসেবে পরিচিত
বড়পীর আব্দুল কাদির জিলানির (র) সাথে শয়তানের কথপোকথন:
একবার
এক
মরুপ্রান্তরে হযরত
বড়পীর
(রহ.)
ভ্রমণ
করছিলেন। ইবাদত-বন্দেগী ও ধ্যানসাধনার এক
বিশেষ
ক্ষণে
অদৃশ্য
থেকে
আওয়াজ
এলো!
হে
আবদুল
কাদের
আমি
তোমার
প্রতি
সন্তুষ্ট। সাধনার
মাধ্যমে তুমি
আজ
এমন
এক
পর্যায়ে উপনীত
হয়েছ
যে,
আমি
আল্লাহ
তোমার
প্রতি
সন্তুষ্ট হয়ে
গিয়েছি। অতএব,
এখন
থেকে
শরীয়তের কোন
বিধান
তোমার
উপর
বাধ্যতামূলক নেই।
তুমি
ইবাদত
কর
বা
না
কর,
এতে
কিছু
আসবে
যাবে
না।
যে
কোন
ধরনের
কাজে
তুমি
এখন
থেকে
স্বাধীন।
এ
ধরনের
কথা
শুনে
হযরত
জিলানী
(রহ.)
খুব
দৃঢ়তার
সাথে
‘লা-হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা
বিল্লাহ’ পড়লেন।
অদৃশ্য
আওয়াজটি বন্ধ
হয়ে
গেল।
তিনি
বলতে
লাগলেন
হে
অভিশপ্ত শয়তান,
তোর
কুমন্ত্রণা থেকে
আমি
আল্লাহর আশ্রয়
প্রার্থনা করি।
তোর
এ
প্রস্তাব শুনেই
আমি
বুঝতে
পেরেছি
যে,
এ
তোর
ভয়াবহ
কৌশল।
আমকে
পথচ্যুত করার
এক
মারাত্মক কূটচাল। কেননা,
পবিত্র
কোরআনে
আছে,
আল্লাহ
কোন
মানব
সন্তানের সাথে
সরাসরি
কথা
বলেন
না।
তাছাড়া
সাধনার
কোন
পর্যায়েই ইবাদ-বন্দেগীর দায়িত্ব কারো উপর থেকে
তুলে
নেয়া
হয়
না।
শরীয়ত
অমান্য
করার
নির্দেশ আল্লাহ
কখনও
কোন
ব্যক্তিকে দেন
না।
তোর
আওয়াজ
শোনামাত্রই আমি
বুঝতে
পেরেছি
যে,
এমন
বাণী
আল্লাহর পক্ষ
থেকে
আসতে
পারে
না।
এ
নিশ্চয়ই শয়তানের কৌশল।
এ
কথা
শুনে
শয়তান
বলল,
এ
ধরনের
কথা
বলে
এর
আগে
আমি
এই
প্রান্তরেই অন্তত
২৭
জন
সাধকের
সর্বনাশ করেছি।
আজ
আপনি
নিজ
প্রজ্ঞা, জ্ঞান
ও
উচ্চপর্যায়ের সাধনাবলেই রক্ষা
পেয়ে
গেলেন,
হে
যুগশ্রেষ্ঠ ওলী।
তখন
এ
কথা
শুনে
হযরত
জিলানী
(রহ.)
আবার
পড়লেন
‘লা
হাওলা
ওয়ালা
কুওয়াতা ইল্লা
বিল্লাহ’।
অর্থাৎ
আল্লাহর খাস
রহমত
ছাড়া
ধূর্ত
প্রতারক শয়তান
থেকে
বেঁচে
থাকার
কোন
শক্তি
ও
ক্ষমতা
আমার
নেই।
শয়তানের প্ররোচনা থেকে
রক্ষা
পাওয়ারও দোয়া
আল্লাহর প্রিয়
নবী
(সা.)
আমাদের
শিক্ষা
দিয়ে
গিয়েছেন। হযরত
জিলানী
(রহ.)
এ
দোয়া
পড়ে
বলতে
লাগলেন,
ঘটনার
শেষ
অংশে
এসে
তুই
আমাকে
নতুন
করে
আবার
ধোঁকা
দেয়ার
চেষ্টা
করছিস
হে
বিতাড়িত শয়তান।
তুই
বুঝাতে
চাইছিস
যে,
আমার
জ্ঞান
ও
প্রজ্ঞার দ্বারা
আমি
রক্ষা
পেয়েছি। অথচ
আমি
যে
দোয়াটি
পড়েছি,
এতে
বলা
আছে
‘আল্লাহর সাহায্য ও
করুনা
ছাড়া
রক্ষার
কোন
উপায়
বান্দার নেই।
এ
মন্তব্য শুনে
শয়তান
বলল,
সত্যিই
আপনি
আল্লাহর প্রকৃত
খাস
বান্দা। কোনভাবেই আমি
আপনাকে
খোদাবিমুখ করতে
পারলাম
না।
একথা
বলে
শয়তান
ব্যর্থ
হয়ে
দূরে
সরে
গেল।